ব্যাংক খাত ঠিক হতে ২ থেকে ৩ বছর লাগবে : ড. আহসান এইচ মনসুর
কয়েকটি ব্যাংক এখনও ঠিক মতো গ্রাহকদের টাকা দিতে পারছে না, তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাদের সহায়তা করছে। সব চেষ্টাই করা হচ্ছে। তবে গত ৩ মাসে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে টাকা ছাপিয়ে তাদের কোনো নগদ সহায়তা দেওয়া হয়নি। আশা করি ২ থেকে ৩ বছরের মধ্যে একটি ভালো ব্যাংকিং খাত দেখতে পারব। প্রথমে ১০টি ব্যাংকের সম্পদ হিসাবের অডিট করা হচ্ছে, পর্যায়ক্রমে সবগুলোরই করা হবে।
সোমবার (১১ নভেম্বর) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও-এ বণিক বার্তা আয়োজিত তৃতীয় বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সম্মেলন ‘বৈষম্য, আর্থিক অপরাধ ও বাংলাদেশের অর্থনীতির নিরাময়’ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
ব্যাংক নিয়ে তিনি বলেন, বিগত সময়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ব্যাংকখাত। তবে দ্রুত সব সমাধান হবে না। আমাদের ব্যাংক খাতে নাজুক অবস্থা তৈরি করা হয়েছিল। কারণ এক ব্যাংকের ২৭ হাজার কোটি টাকার এসেট এক পরিবার ২৩ হাজার নিয়েছে, সেখানে আমার হাতে ম্যাজিক নেই। তবে কোনো ব্যাংক বন্ধ হবে না এটা বলতে পারি। দুর্বল ব্যাংকে টাকা তুলতে পারছে না এ কারণে তাদের তারল্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে, সব সমাধানও হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, আমরা শ্রীলঙ্কা হয়ে যায়নি, আমাদের গ্রোথ নেগেটিভ হয়নি। আমরা ঠিক করছি বিনিময় হার, বিনিয়োগ পরিবেশ। আমরা আশাবাদী বিনিয়োগ আসবে, আমরা চাই বিনিয়োগ আসুক। অর্থপাচার নিয়ে তিনি বলেন, দুবৃত্তায়নের মাধ্যমে দেশ থেকে কয়েক লাখ কোটি টাকা পাচার করা হয়েছে, এটা ফিরে পাওয়া কঠিন ছিল। তবে জাল ফেলা হয়েছে এখন গোটানো বাকি। এরইমধ্যে আমরা দেশ ও দেশের বাইরে যোগাযোগ করেছি। আমাদের সহযোগিতার জন্য চলতি সপ্তাহে আমেরিকার প্রতিনিধি আসছে, যুক্তরাজ্যের প্রতিনিধি আসবে, বিশ্ব ব্যাংক আসবে, সিঙ্গাপুরের সঙ্গেও কথা হবে।
তিনি বলেন, আমরা চাই না কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা শিল্প বন্ধ হয়ে যাক। কারণ সেখানে অনেক মানুষের কর্মসংস্থান রয়েছে। আবার কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের হিসাবও জব্দ করা হয়নি, হবেও না। ব্যাংক-আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে তৃণমূল পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে। ঢাকায় টোটাল ব্যাংকিং এর ৫৯ শতাংশ, চট্টগ্রামে ১৭ শতাংশ বাকিটা অন্য জায়গা। আমরা এটাকে সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে চাই। আমাদের এজেন্ট ব্যাংক বড় কাজ করছ, এমএফএস সেবা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে কোনো দুর্ভিক্ষ হবে না। আমরা কি শ্রীলঙ্কা হয়ে গেছি, না। আমাদের গ্রোথ কমেনি। যে কোনো পলিসি ইমপ্লিমেন্ট করলেও মূল্যস্ফীতি এক বছরের আগে কোনো দেশেই কমে না। চার মাস পার করছি আমাকে আরো ৮ মাস সময় দিতে হবে। আমরা শুধু মুদ্রানীতির উপর নির্ভর করছি না। সব প্রয়োজনীয় পন্য এলসি খোলা, শুল্ক শিথিল করা হয়েছে।