ঢাকা ০১:৪৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫

সিটিসেল ফিরে আসছে

হাসিনা জান্নাত
১২:১১:০০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৪



আওয়ামী লীগ সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় বন্ধ করে দেওয়া দেশের প্রথম মোবাইল টেলিফোন অপারেটর সিটিসেল আবার কার্ক্রম শুরু করতে চাইছে। বন্ধ কোম্পানিটি পুণরায় ব্যবসা শুরু করতে লাইসেন্স ফেরত চেয়ে টেলিকমিউনিকেশন খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি অথরিটি’র (বিটিআরসি) কাছে আবাদেন করা হয়েছে ।


সিটিসেলের করপোরেট বিভাগের প্রধান নিশাত আলি খান বিটিআরসির সিদ্ধান্তের ‘পুনর্মূল্যায়ন’ চেয়ে গত ১ সেপ্টেম্বর তারা আবেদনটি জমা দিয়েছেন। আবেদন অনুযায়ী করণীয় নির্ধারণে বিটিআরসি কাজ শুরু করেছে বলেও জানা গেছে।


উল্লেখ্য, দেশে সিডিএমএ প্রযুক্তির একমাত্র মোবাইল অপারেটর ছিল সিটিসেল। ২০১৭ সালের ১১ জুন বিটিআরসি সিটিসেলের তরঙ্গ (স্পেক্ট্রাম) বন্ধ করে দেয়। সর্বশেষ গত বছর মার্চে সিটিসেলের লাইসেন্স বাতিলের সিদ্ধান্ত জানায় বিটিআরসি।


সিটিসেলের মূল কোম্পানি প্যাসিফিক বাংলাদেশ টেলিকম লিমিটেডের (পিবিটিএল) মালিকানা বিএনপির সাবেক নেতা এম মোর্শেদ খান পরিবারের। রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে সিটিসেল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের ‘বৈষম্যের শিকার হয়’ বলে বিটিআরসিতে জমা দেওয়া চিঠিতে দাবি করা হয়েছে।


১৯৮৯ সালে বাংলাদেশের প্রথম মোবাইল ফোন অপারেটর হিসেবে লাইসেন্স পেয়েছিল বাংলাদেশ টেলিকম লিমিটেড (বিটিএল), যা পরে মালিকানার হাতবদলে সিটিসেল নাম পায়।


লাইসেন্স নেওয়ার পরের বছর হংকং হাচিসন টেলিকমিউনিকেশন লিমিটেড এ কোম্পানিতে বিনিয়োগ করলে বিটিএল নাম বদলে হয় হাচসন বাংলাদেশ টেলিকম লিমিটেড (এইচবিটিএল)।


১৯৯৩ সালে কোম্পানির মালিকানায় আবার পরিবর্তন আসে। সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোরশেদ খানের মালিকানাধীন প্যাসিফিক মোটরস ও ফারইস্ট টেলিকম মিলে এইচবিটিএল-এর শেয়ার কিনে নেয়।


তখন কোম্পানির নাম বদলে হয় প্যাসিফিক বাংলাদেশ টেলিকম লিমিটেড, ব্র্যান্ডিং শুরু হয় সিটিসেল নামে। পরে ২০০৪ সালে এ কোম্পানিতে বিনিয়োগ করে সিঙ্গাপুরের সিংটেল।


প্যাসিফিক মোটরস যখন সিটিসেলের মালিকানায় আসে, মোরশেদ খান তখন মন্ত্রীর পদমর্যাদায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বিনিয়োগ বিষয়ক বিশেষ দূতের দায়িত্বে। আর এইচ এম এরশাদ সরকারের সময়ে সিটিসেল যখন লাইসেন্স পায়, মোরশেদ খান তখন ছিলেন জাতীয় পার্টির কোষাধ্যক্ষ।

ওই আবেদনে বলা হয়, সিটিসেল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের ‘বিরোধী একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে’ যুক্ত ছিল এমন ধারণা থেকে লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে, যে ধারনাটি ছিল ‘অযৌক্তিক’।
“আমরা অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, গত আট বছরে বিটিআরসির পক্ষপাতদুষ্ট, অপ্রীতিকর ও অসৎ উদ্দেশ্যে নেওয়া সিদ্ধান্ত ও মূল্যায়নের শিকার হয়েছে সিটিসেলের মূল কোম্পানি পিবিটিএল।”


পেছনের কথা
পৌনে পাঁচশ কোটি টাকা বকেয়া আদায়ে ২০১৬ সালের জুলাই মাসে সিটিসেলের কার্যক্রম বন্ধে প্রথম উদ্যোগ নেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি। এর পর থেকে শুরু হয় চিঠি চালাচালি।


বিটিআরসির প্রথম চিঠি পেয়েই সিটিসেল হাই কোর্টে যায়। ওই বছরের ২২ অগাস্ট হাই কোর্টের আদেশে বলা হয়, নোটিসের জবাব দিতে বিটিআরসি যে এক মাস সময় দিয়েছিল, ওই সময় পর্যন্ত সিটিসেলকে কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ দিতে হবে।


হাই কোর্টের ওই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে যায় বিটিআরসি। ২৯ অগাস্ট আপিল বিভাগের আদেশে দেনা শোধের জন্য সিটিসেলকে দুই মাস সময় দেয় আপিল বিভাগ। বিটিআরসির পক্ষ থেকে বলা হয়, বকেয়া ৪৭৭ কোটি টাকার মধ্যে দুই তৃতীয়াংশ প্রথম এক মাসে এবং এক তৃতীয়াংশ পরবর্তী এক মাসে পরিশোধ করতে হবে।


এছাড়া ১৭ অগাস্টের পর থেকে প্রতিদিন বিটিআরসির কাছে পাওনা হওয়া ১৮ লাখ টাকা করে অবিলম্বে পরিশোধের নির্দেশ দিয়ে আদালত বলে, টাকা না পেলে বিটিআরসি যে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারবে।


২০ অক্টোবর সিটিসেলের তরঙ্গ স্থগিত করে বিটিআরসি। মহাখালীতে সিটিসেলের প্রধান কার্যালয়ে গিয়ে সেই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করেন বিটিআরসি কর্মকর্তারা।


তখনকার টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম সেদিন বলেন, একমাসের প্রথম কিস্তিতে নির্ধারিত ৩১৮ কোটি ৪২ লাখ টাকার মধ‌্যে সিটিসেল মাত্র ১৩০ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে।


এরপর সিটিসেল তরঙ্গ বাতিলের সিদ্ধান্ত স্থগিত বা পুনরায় তরঙ্গ বরাদ্দের নির্দেশনা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে যায়। শুনানি শেষে আদালত গতবছর ৩ নভেম্বর আদেশের দিন রাখে। ৩ নভেম্বর সিটিসেলের তরঙ্গ খুলে দিতে বলা হয়।
৩ নভেম্বরের শুনানিতে বিটিআরসি তাদের দাবির পরিমাণ কমিয়ে ৩৯৭ কোটি টাকায় নিয়ে আসে। কিন্তু ওই অংক নিয়েও সিটিসেল আপত্তি তোলে। এই পরিপ্রেক্ষিতে দ্বিতীয় কিস্তিতে সিটিসেলকে কত টাকা দিতে হবে তা নির্ধারণ করে দেয় আদালত। বলা হয়, ১৯ নভেম্বরের মধ্যে সিটিসেল ১০০ কোটি টাকা না দিলে বিটিআরসি আবার তরঙ্গ বন্ধ করে দিতে পারবে।


এছাড়া আদালত বিটিআরসির সঙ্গে সিটিসেলের বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সাবেক ভিসি অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরীর নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিটি গঠনের নির্দেশ দেয়। ওই কমিটিকে এক মাসের মধ্যে বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে বলা হয়।


তিন দিনেও তরঙ্গ ফিরে না পেয়ে ৬ নভেম্বর ফের আদালতে যায় সিটিসেল। তাদের আবেদনের শুনানি করে এ বিষয়ে বিটিআরসির ব্যাখা জানতে চায় আপিল বিভাগ। ওইদিন সন্ধ্যায় বিটিআরসির কর্মকর্তারা সিটিসেলে গিয়ে তরঙ্গ ফিরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া শেষ করেন। কিন্তু এরপর রাজধানীর মহাখালী এলাকার বাইরের সিটিসেল গ্রাহকরা কোনো সেবা বা সংযোগ পাচ্ছিলেন না।


সিটিসেলের আইনজীবী আহসানুল করিমের ভাষ্য অনুযায়ী, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী ১৯ নভেম্বরের আগেই ১০০ কোটি টাকা পরিশোধ করে সিটিসেল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তারপরও ২০১৭ সালের ২৬ এপ্রিল সিটিসেলকে কারণ দর্শাও নোটিস দেয় বিটিআরসি। কেন তাদের তরঙ্গ বন্ধ করা হবে না- তা জানতে চাওয়া হয় সেখানে।


সিটিসেল ওই নোটিসের জবাব দিলেও ‘যথাযথ কারণ উল্লেখ না করেই’ ২০১৭ সালের ১১ জুন বিটিআরসি সিটিসেলের তরঙ্গ বন্ধ এবং রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি লাইসেন্স বাতিল করে দেয় বলে আইনজীবীর ভাষ্য।
বন্ধ হওয়ার সাত বছরের মাথায় ২০২৩ সালের মার্চে সিটিসেলের লাইসেন্স বাতিলের সিদ্ধান্ত জানায় বিটিআরসি।

নিউজটি শেয়ার করুন

সিটিসেল ফিরে আসছে

আপডেট সময় ১২:১১:০০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৪



আওয়ামী লীগ সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় বন্ধ করে দেওয়া দেশের প্রথম মোবাইল টেলিফোন অপারেটর সিটিসেল আবার কার্ক্রম শুরু করতে চাইছে। বন্ধ কোম্পানিটি পুণরায় ব্যবসা শুরু করতে লাইসেন্স ফেরত চেয়ে টেলিকমিউনিকেশন খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি অথরিটি’র (বিটিআরসি) কাছে আবাদেন করা হয়েছে ।


সিটিসেলের করপোরেট বিভাগের প্রধান নিশাত আলি খান বিটিআরসির সিদ্ধান্তের ‘পুনর্মূল্যায়ন’ চেয়ে গত ১ সেপ্টেম্বর তারা আবেদনটি জমা দিয়েছেন। আবেদন অনুযায়ী করণীয় নির্ধারণে বিটিআরসি কাজ শুরু করেছে বলেও জানা গেছে।


উল্লেখ্য, দেশে সিডিএমএ প্রযুক্তির একমাত্র মোবাইল অপারেটর ছিল সিটিসেল। ২০১৭ সালের ১১ জুন বিটিআরসি সিটিসেলের তরঙ্গ (স্পেক্ট্রাম) বন্ধ করে দেয়। সর্বশেষ গত বছর মার্চে সিটিসেলের লাইসেন্স বাতিলের সিদ্ধান্ত জানায় বিটিআরসি।


সিটিসেলের মূল কোম্পানি প্যাসিফিক বাংলাদেশ টেলিকম লিমিটেডের (পিবিটিএল) মালিকানা বিএনপির সাবেক নেতা এম মোর্শেদ খান পরিবারের। রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে সিটিসেল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের ‘বৈষম্যের শিকার হয়’ বলে বিটিআরসিতে জমা দেওয়া চিঠিতে দাবি করা হয়েছে।


১৯৮৯ সালে বাংলাদেশের প্রথম মোবাইল ফোন অপারেটর হিসেবে লাইসেন্স পেয়েছিল বাংলাদেশ টেলিকম লিমিটেড (বিটিএল), যা পরে মালিকানার হাতবদলে সিটিসেল নাম পায়।


লাইসেন্স নেওয়ার পরের বছর হংকং হাচিসন টেলিকমিউনিকেশন লিমিটেড এ কোম্পানিতে বিনিয়োগ করলে বিটিএল নাম বদলে হয় হাচসন বাংলাদেশ টেলিকম লিমিটেড (এইচবিটিএল)।


১৯৯৩ সালে কোম্পানির মালিকানায় আবার পরিবর্তন আসে। সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোরশেদ খানের মালিকানাধীন প্যাসিফিক মোটরস ও ফারইস্ট টেলিকম মিলে এইচবিটিএল-এর শেয়ার কিনে নেয়।


তখন কোম্পানির নাম বদলে হয় প্যাসিফিক বাংলাদেশ টেলিকম লিমিটেড, ব্র্যান্ডিং শুরু হয় সিটিসেল নামে। পরে ২০০৪ সালে এ কোম্পানিতে বিনিয়োগ করে সিঙ্গাপুরের সিংটেল।


প্যাসিফিক মোটরস যখন সিটিসেলের মালিকানায় আসে, মোরশেদ খান তখন মন্ত্রীর পদমর্যাদায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বিনিয়োগ বিষয়ক বিশেষ দূতের দায়িত্বে। আর এইচ এম এরশাদ সরকারের সময়ে সিটিসেল যখন লাইসেন্স পায়, মোরশেদ খান তখন ছিলেন জাতীয় পার্টির কোষাধ্যক্ষ।

ওই আবেদনে বলা হয়, সিটিসেল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের ‘বিরোধী একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে’ যুক্ত ছিল এমন ধারণা থেকে লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে, যে ধারনাটি ছিল ‘অযৌক্তিক’।
“আমরা অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, গত আট বছরে বিটিআরসির পক্ষপাতদুষ্ট, অপ্রীতিকর ও অসৎ উদ্দেশ্যে নেওয়া সিদ্ধান্ত ও মূল্যায়নের শিকার হয়েছে সিটিসেলের মূল কোম্পানি পিবিটিএল।”


পেছনের কথা
পৌনে পাঁচশ কোটি টাকা বকেয়া আদায়ে ২০১৬ সালের জুলাই মাসে সিটিসেলের কার্যক্রম বন্ধে প্রথম উদ্যোগ নেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি। এর পর থেকে শুরু হয় চিঠি চালাচালি।


বিটিআরসির প্রথম চিঠি পেয়েই সিটিসেল হাই কোর্টে যায়। ওই বছরের ২২ অগাস্ট হাই কোর্টের আদেশে বলা হয়, নোটিসের জবাব দিতে বিটিআরসি যে এক মাস সময় দিয়েছিল, ওই সময় পর্যন্ত সিটিসেলকে কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ দিতে হবে।


হাই কোর্টের ওই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে যায় বিটিআরসি। ২৯ অগাস্ট আপিল বিভাগের আদেশে দেনা শোধের জন্য সিটিসেলকে দুই মাস সময় দেয় আপিল বিভাগ। বিটিআরসির পক্ষ থেকে বলা হয়, বকেয়া ৪৭৭ কোটি টাকার মধ্যে দুই তৃতীয়াংশ প্রথম এক মাসে এবং এক তৃতীয়াংশ পরবর্তী এক মাসে পরিশোধ করতে হবে।


এছাড়া ১৭ অগাস্টের পর থেকে প্রতিদিন বিটিআরসির কাছে পাওনা হওয়া ১৮ লাখ টাকা করে অবিলম্বে পরিশোধের নির্দেশ দিয়ে আদালত বলে, টাকা না পেলে বিটিআরসি যে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারবে।


২০ অক্টোবর সিটিসেলের তরঙ্গ স্থগিত করে বিটিআরসি। মহাখালীতে সিটিসেলের প্রধান কার্যালয়ে গিয়ে সেই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করেন বিটিআরসি কর্মকর্তারা।


তখনকার টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম সেদিন বলেন, একমাসের প্রথম কিস্তিতে নির্ধারিত ৩১৮ কোটি ৪২ লাখ টাকার মধ‌্যে সিটিসেল মাত্র ১৩০ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে।


এরপর সিটিসেল তরঙ্গ বাতিলের সিদ্ধান্ত স্থগিত বা পুনরায় তরঙ্গ বরাদ্দের নির্দেশনা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে যায়। শুনানি শেষে আদালত গতবছর ৩ নভেম্বর আদেশের দিন রাখে। ৩ নভেম্বর সিটিসেলের তরঙ্গ খুলে দিতে বলা হয়।
৩ নভেম্বরের শুনানিতে বিটিআরসি তাদের দাবির পরিমাণ কমিয়ে ৩৯৭ কোটি টাকায় নিয়ে আসে। কিন্তু ওই অংক নিয়েও সিটিসেল আপত্তি তোলে। এই পরিপ্রেক্ষিতে দ্বিতীয় কিস্তিতে সিটিসেলকে কত টাকা দিতে হবে তা নির্ধারণ করে দেয় আদালত। বলা হয়, ১৯ নভেম্বরের মধ্যে সিটিসেল ১০০ কোটি টাকা না দিলে বিটিআরসি আবার তরঙ্গ বন্ধ করে দিতে পারবে।


এছাড়া আদালত বিটিআরসির সঙ্গে সিটিসেলের বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সাবেক ভিসি অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরীর নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিটি গঠনের নির্দেশ দেয়। ওই কমিটিকে এক মাসের মধ্যে বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে বলা হয়।


তিন দিনেও তরঙ্গ ফিরে না পেয়ে ৬ নভেম্বর ফের আদালতে যায় সিটিসেল। তাদের আবেদনের শুনানি করে এ বিষয়ে বিটিআরসির ব্যাখা জানতে চায় আপিল বিভাগ। ওইদিন সন্ধ্যায় বিটিআরসির কর্মকর্তারা সিটিসেলে গিয়ে তরঙ্গ ফিরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া শেষ করেন। কিন্তু এরপর রাজধানীর মহাখালী এলাকার বাইরের সিটিসেল গ্রাহকরা কোনো সেবা বা সংযোগ পাচ্ছিলেন না।


সিটিসেলের আইনজীবী আহসানুল করিমের ভাষ্য অনুযায়ী, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী ১৯ নভেম্বরের আগেই ১০০ কোটি টাকা পরিশোধ করে সিটিসেল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তারপরও ২০১৭ সালের ২৬ এপ্রিল সিটিসেলকে কারণ দর্শাও নোটিস দেয় বিটিআরসি। কেন তাদের তরঙ্গ বন্ধ করা হবে না- তা জানতে চাওয়া হয় সেখানে।


সিটিসেল ওই নোটিসের জবাব দিলেও ‘যথাযথ কারণ উল্লেখ না করেই’ ২০১৭ সালের ১১ জুন বিটিআরসি সিটিসেলের তরঙ্গ বন্ধ এবং রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি লাইসেন্স বাতিল করে দেয় বলে আইনজীবীর ভাষ্য।
বন্ধ হওয়ার সাত বছরের মাথায় ২০২৩ সালের মার্চে সিটিসেলের লাইসেন্স বাতিলের সিদ্ধান্ত জানায় বিটিআরসি।

নিউজটি শেয়ার করুন