ঢাকা ০৫:৩৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪

তারল্য সংকটে থাকা ব্যাংককে সহায়তায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিকল্প উদ্যোগ

নিউজ ডেস্ক
০৯:১৬:০৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪


তারল্য সংকটে থাকা ব্যাংকগুলোকে সহায়তা দিতে বিকল্প উদ্যোগ নিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এজন্য তিন বছর পর আবারও চালু হলো বাংলাদেশ ব্যাংক বিল। এর মাধ্যমে বাজার থেকে অতিরিক্ত তারল্য উঠিয়ে নিতে চায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক, যা দেওয়া হবে দুর্বল ব্যাংকগুলোকে। এটি সফল হলে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং ব্যাংকগুলোর তারল্য সংকটের সমাধান সহজ হবে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।

বিগত দেড় দশকে অনিয়ম-দুর্নীতি ও লুটপাটের কারণে দুর্বল হয়ে পড়েছে ডজন খানেক ব্যাংক। এসব ব্যাংককে তারল্য সহায়তা দেওয়া হলেও চাহিদা মতো অর্থ তুলতে পারছে না গ্রাহকরা।

একজন গ্রাহক বলেন, ‘প্রতিমাসে আমার ৬০ হাজার টাকা করে দিতে হয়। কিন্তু এরা দেয় ৫ হাজার। তাহলে আমি কিভাবে ছেলেকে টাকা দেবো। আমার তো এখানে ১০–১২ লাখ টাকা পরে আছে।’

দুর্বল ব্যাংকগুলোর নির্বাহীরা বলছেন, তারল্য সংকট কাটাতে খেলাপি ঋণ আদায় সহ বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে সবল ব্যাংক থেকে সহায়তা পর্যাপ্ত নয় বলে দাবি তাদের।

এসআইবিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ ফোরকানুল্লাহ বলেন, ‘রেমিট্যান্সগুলো যাতে যথাযথভাবে পেমেন্ট করতে পারি। এটা আমাদের একটা অব্যাহত প্রচেষ্টা। আমাদের ছোট ছোট কাস্টমাররা, বিশেষ করে গ্রামে টাকাটা তুলতে পারলে স্বস্তি পাবে।’

এমন পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাংলাদেশ বিল নামে বন্ড ছেড়েছে। যার মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক গ্যারান্টি চুক্তি দিয়ে নয়, বরং নিজেই বাজার থেকে অতিরিক্ত তারল্য তুলে নেবে। পরে এর মাধ্যমে দুর্বল ব্যাংকগুলোকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা বলেন, ‘আমরা চাচ্ছি মার্কেটে তারল্য প্রবাহ আরও কিভাবে টাইটেনিং করা যায়। সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির অংশ হিসেবে আমরা বাংলাদেশ ব্যাংক বিল নিলাম করার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি।’

বিশ্লেষকরা বলছেন, নতুন এ কৌশল কার্যকর হলে কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়ে আস্থা ফিরবে দুর্বল ব্যাংকগুলোতে। তবে ব্যাংকগুলোকে নিজেদের অর্থনৈতিক সক্ষমতাও বাড়াতে হবে।

বিআইবিএমের সাবেক মহাপরিচালক তৌফিক আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘আমার মনে হয়, বাংলাদেশ ব্যাংক একটি অল্টারনেটিভ সোর্স বের করেছে যে সে এই সারপ্লাস ইক্যুইটিগুলো সবল ব্যাংকের কাছ থেকে কিনে নেবে। সেটা আবার দুর্বল ব্যাংকগুলোর কাছে বিক্রি করবে।’

শুধু সহায়তা দিয়ে নয়, ব্যাংকগুলোতে সুশাসন ফিরিয়ে আনতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতেরও তাগিদ দেন বিশ্লেষকরা।

নিউজটি শেয়ার করুন

তারল্য সংকটে থাকা ব্যাংককে সহায়তায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিকল্প উদ্যোগ

আপডেট সময় ০৯:১৬:০৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪


তারল্য সংকটে থাকা ব্যাংকগুলোকে সহায়তা দিতে বিকল্প উদ্যোগ নিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এজন্য তিন বছর পর আবারও চালু হলো বাংলাদেশ ব্যাংক বিল। এর মাধ্যমে বাজার থেকে অতিরিক্ত তারল্য উঠিয়ে নিতে চায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক, যা দেওয়া হবে দুর্বল ব্যাংকগুলোকে। এটি সফল হলে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং ব্যাংকগুলোর তারল্য সংকটের সমাধান সহজ হবে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।

বিগত দেড় দশকে অনিয়ম-দুর্নীতি ও লুটপাটের কারণে দুর্বল হয়ে পড়েছে ডজন খানেক ব্যাংক। এসব ব্যাংককে তারল্য সহায়তা দেওয়া হলেও চাহিদা মতো অর্থ তুলতে পারছে না গ্রাহকরা।

একজন গ্রাহক বলেন, ‘প্রতিমাসে আমার ৬০ হাজার টাকা করে দিতে হয়। কিন্তু এরা দেয় ৫ হাজার। তাহলে আমি কিভাবে ছেলেকে টাকা দেবো। আমার তো এখানে ১০–১২ লাখ টাকা পরে আছে।’

দুর্বল ব্যাংকগুলোর নির্বাহীরা বলছেন, তারল্য সংকট কাটাতে খেলাপি ঋণ আদায় সহ বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে সবল ব্যাংক থেকে সহায়তা পর্যাপ্ত নয় বলে দাবি তাদের।

এসআইবিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ ফোরকানুল্লাহ বলেন, ‘রেমিট্যান্সগুলো যাতে যথাযথভাবে পেমেন্ট করতে পারি। এটা আমাদের একটা অব্যাহত প্রচেষ্টা। আমাদের ছোট ছোট কাস্টমাররা, বিশেষ করে গ্রামে টাকাটা তুলতে পারলে স্বস্তি পাবে।’

এমন পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাংলাদেশ বিল নামে বন্ড ছেড়েছে। যার মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক গ্যারান্টি চুক্তি দিয়ে নয়, বরং নিজেই বাজার থেকে অতিরিক্ত তারল্য তুলে নেবে। পরে এর মাধ্যমে দুর্বল ব্যাংকগুলোকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা বলেন, ‘আমরা চাচ্ছি মার্কেটে তারল্য প্রবাহ আরও কিভাবে টাইটেনিং করা যায়। সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির অংশ হিসেবে আমরা বাংলাদেশ ব্যাংক বিল নিলাম করার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি।’

বিশ্লেষকরা বলছেন, নতুন এ কৌশল কার্যকর হলে কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়ে আস্থা ফিরবে দুর্বল ব্যাংকগুলোতে। তবে ব্যাংকগুলোকে নিজেদের অর্থনৈতিক সক্ষমতাও বাড়াতে হবে।

বিআইবিএমের সাবেক মহাপরিচালক তৌফিক আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘আমার মনে হয়, বাংলাদেশ ব্যাংক একটি অল্টারনেটিভ সোর্স বের করেছে যে সে এই সারপ্লাস ইক্যুইটিগুলো সবল ব্যাংকের কাছ থেকে কিনে নেবে। সেটা আবার দুর্বল ব্যাংকগুলোর কাছে বিক্রি করবে।’

শুধু সহায়তা দিয়ে নয়, ব্যাংকগুলোতে সুশাসন ফিরিয়ে আনতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতেরও তাগিদ দেন বিশ্লেষকরা।

নিউজটি শেয়ার করুন