ঢাকা ১২:২৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫

বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুললে উৎপাদন বাড়বে : কাজী জাহিন হাসান, পরিচালক, কাজী ফার্মস লিমিটেড

নিউজ ডেস্ক
০৮:২৯:৪০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

ডিম ও মুরগির দাম বেড়ে যাওয়ায় আগের সরকার কয়েকটি পোলট্রি কোম্পানিকে দোষ দিয়েছিল। আসলে চিত্রটা ছিল ভিন্ন।

ডিম ও মুরগির দাম বেড়ে যাওয়ায় আগের সরকার কয়েকটি পোলট্রি কোম্পানিকে দোষ দিয়েছিল। আসলে চিত্রটা ছিল ভিন্ন। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর আমদানীকৃত ফিডের দাম বেড়ে যাওয়ায় ডিম ও মুরগির দাম বেড়ে গিয়েছিল। বিষয়টিতে পোলট্রি শিল্প ও বাংলাদেশ সরকারের নিয়ন্ত্রণ ছিল না। একই সঙ্গে টাকার অবমূল্যায়ন ঘটতে থাকে। ১ ডলারের মূল্য ৮৬ টাকা থেকে ১২০ টাকা হয়। বিগত সরকারের বিপর্যয়মূলক অর্থনৈতিক পলিসির কারণে এ অবমূল্যায়ন হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, ২০২০ সালের জুনে ব্রড মানি ছিল ১৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। ২০২৩ সালের জুনে এ অংক ১৮ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছায়। মাত্র তিন বছরে অর্থ সরবরাহ বেড়েছে ৫ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা। ১৬টি পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য এ টাকা যথেষ্ট। এ অর্থ সরবরাহ দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় টাকার অবমূল্যায়ন ঘটতে থাকে, যার ফলে মূল্যস্ফীতি ঘটে।

আগের সরকারের মন্ত্রীরা স্বীকার করেননি যে তাদের নীতির কারণেই মূল্যস্ফীতি হয়েছে। তাই তারা মূল্যস্ফীতির জন্য কাল্পনিক সিন্ডিকেটকে দোষ দিয়েছিল। প্রতিযোগিতা কমিশন কয়েকটি পোলট্রি কোম্পানির বিরুদ্ধে কারসাজির অভিযোগ এনেছিল। এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন। সরকারের হয়রানির কারণে পোলট্রি খাতে বিনিয়োগের পরিবেশ নষ্ট হয়ে গেছে। এতে ভবিষ্যতে ঘাটতি দেখা যেতে পারে।

কোনো কোম্পানির বিরুদ্ধে অভিযোগের আগে অর্থনীতিবিদের সাহায্যে বাজার বিশ্লেষণ করে দেখা দরকার। মূল্যস্ফীতি রোধে সঠিক পলিসির প্রয়োজন। সুদের হার উচ্চ হতে হবে এবং রাজস্ব ঘাটতি কমাতে হবে। অন্যথায় টাকার অবমূল্যায়ন ও মূল্যস্ফীতি অব্যাহত থাকবে। বাজার মনিটরিং করে কোনো লাভ হচ্ছে না। বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুললেই উৎপাদন বাড়বে।

প্রতিদিন হাজার হাজার খামারি মুরগি ও ডিম বিক্রি করেন। এরকম প্রতিযোগিতামূলক বাজারে যেকোনো কৃষি পণ্যের মূল্য প্রধানত চাহিদা ও সরবরাহের তারতম্যের কারণে বাড়ে বা কমে। এখানে সিন্ডিকেট থাকার কোন প্রশ্নই নেই। যেমন শীতকালে বাজারে সবজির সরবরাহ বেশী থাকায় অনেক ভোক্তা ডিমের বদলে সবজি কেনেন, ফলে ডিমের চাহিদা কমে যায়, দামও কমে যায়। অপরদিকে গ্রীষ্মকালে গরম আবহাওয়ায়, মুরগি খাবার কম খায় ফলে ডিমের উৎপাদন কমে যায়, এতে দাম বেড়ে যায়। এভাবে বাজারে বিকল্প পণ্যের সহজলভ্যতা , প্রতিকূল আবহাওয়া ইত্যাদি কারণেও পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পায় অথবা কমে।

বিগত সরকারের বিপথগামী অর্থনৈতিক নীতির কারণে মূল্যস্ফীতি সৃষ্টি হয়েছিল । বাজার বিশ্লেষণ না করেই প্রতিযোগিতা কমিশন কর্তৃক হয়রানিমূলক মামলা দায়ের করে আমাদের বলির পাঁঠা বানানোর চেষ্টা করা হয়। বাজার বিশ্লেষণ করলে তারা বুঝতে পারতো যে কাজী ফার্মস তাদের মাত্র ৩ শতাংশ ডিমের মার্কেট শেয়ার দিয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না।

সৌজন্যে : বণিক বার্তা

নিউজটি শেয়ার করুন

বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুললে উৎপাদন বাড়বে : কাজী জাহিন হাসান, পরিচালক, কাজী ফার্মস লিমিটেড

আপডেট সময় ০৮:২৯:৪০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

ডিম ও মুরগির দাম বেড়ে যাওয়ায় আগের সরকার কয়েকটি পোলট্রি কোম্পানিকে দোষ দিয়েছিল। আসলে চিত্রটা ছিল ভিন্ন।

ডিম ও মুরগির দাম বেড়ে যাওয়ায় আগের সরকার কয়েকটি পোলট্রি কোম্পানিকে দোষ দিয়েছিল। আসলে চিত্রটা ছিল ভিন্ন। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর আমদানীকৃত ফিডের দাম বেড়ে যাওয়ায় ডিম ও মুরগির দাম বেড়ে গিয়েছিল। বিষয়টিতে পোলট্রি শিল্প ও বাংলাদেশ সরকারের নিয়ন্ত্রণ ছিল না। একই সঙ্গে টাকার অবমূল্যায়ন ঘটতে থাকে। ১ ডলারের মূল্য ৮৬ টাকা থেকে ১২০ টাকা হয়। বিগত সরকারের বিপর্যয়মূলক অর্থনৈতিক পলিসির কারণে এ অবমূল্যায়ন হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, ২০২০ সালের জুনে ব্রড মানি ছিল ১৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। ২০২৩ সালের জুনে এ অংক ১৮ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছায়। মাত্র তিন বছরে অর্থ সরবরাহ বেড়েছে ৫ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা। ১৬টি পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য এ টাকা যথেষ্ট। এ অর্থ সরবরাহ দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় টাকার অবমূল্যায়ন ঘটতে থাকে, যার ফলে মূল্যস্ফীতি ঘটে।

আগের সরকারের মন্ত্রীরা স্বীকার করেননি যে তাদের নীতির কারণেই মূল্যস্ফীতি হয়েছে। তাই তারা মূল্যস্ফীতির জন্য কাল্পনিক সিন্ডিকেটকে দোষ দিয়েছিল। প্রতিযোগিতা কমিশন কয়েকটি পোলট্রি কোম্পানির বিরুদ্ধে কারসাজির অভিযোগ এনেছিল। এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন। সরকারের হয়রানির কারণে পোলট্রি খাতে বিনিয়োগের পরিবেশ নষ্ট হয়ে গেছে। এতে ভবিষ্যতে ঘাটতি দেখা যেতে পারে।

কোনো কোম্পানির বিরুদ্ধে অভিযোগের আগে অর্থনীতিবিদের সাহায্যে বাজার বিশ্লেষণ করে দেখা দরকার। মূল্যস্ফীতি রোধে সঠিক পলিসির প্রয়োজন। সুদের হার উচ্চ হতে হবে এবং রাজস্ব ঘাটতি কমাতে হবে। অন্যথায় টাকার অবমূল্যায়ন ও মূল্যস্ফীতি অব্যাহত থাকবে। বাজার মনিটরিং করে কোনো লাভ হচ্ছে না। বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুললেই উৎপাদন বাড়বে।

প্রতিদিন হাজার হাজার খামারি মুরগি ও ডিম বিক্রি করেন। এরকম প্রতিযোগিতামূলক বাজারে যেকোনো কৃষি পণ্যের মূল্য প্রধানত চাহিদা ও সরবরাহের তারতম্যের কারণে বাড়ে বা কমে। এখানে সিন্ডিকেট থাকার কোন প্রশ্নই নেই। যেমন শীতকালে বাজারে সবজির সরবরাহ বেশী থাকায় অনেক ভোক্তা ডিমের বদলে সবজি কেনেন, ফলে ডিমের চাহিদা কমে যায়, দামও কমে যায়। অপরদিকে গ্রীষ্মকালে গরম আবহাওয়ায়, মুরগি খাবার কম খায় ফলে ডিমের উৎপাদন কমে যায়, এতে দাম বেড়ে যায়। এভাবে বাজারে বিকল্প পণ্যের সহজলভ্যতা , প্রতিকূল আবহাওয়া ইত্যাদি কারণেও পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পায় অথবা কমে।

বিগত সরকারের বিপথগামী অর্থনৈতিক নীতির কারণে মূল্যস্ফীতি সৃষ্টি হয়েছিল । বাজার বিশ্লেষণ না করেই প্রতিযোগিতা কমিশন কর্তৃক হয়রানিমূলক মামলা দায়ের করে আমাদের বলির পাঁঠা বানানোর চেষ্টা করা হয়। বাজার বিশ্লেষণ করলে তারা বুঝতে পারতো যে কাজী ফার্মস তাদের মাত্র ৩ শতাংশ ডিমের মার্কেট শেয়ার দিয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না।

সৌজন্যে : বণিক বার্তা

নিউজটি শেয়ার করুন